“পম গানা” নামে পরিচয় পাওয়া “জলন্ত জলিলের” এই মুভিটা সত্যিকার অর্থে অনন্তর আগের মুভি গুলো থেকে ভাল হয়েছে। হল ভর্তি দর্শকই তার প্রমান। ছবির শুরু খুবই সাধারন ভাবে। নায়িকা বর্ষা মডেলিং এ ক্যারিয়ার গড়তে নানান সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। অপরদিকে আমাদের অনন্ত ভাই এই ছবিতে একজন স্বনামধন্য তারকা এবং সুপ্রতিষ্ঠিত আদর্শবান ব্যাবসায়ী। ছবির এই পর্যায়ে “গ্যাংনাম স্টাইল” এর সুরে অনন্ত গান গাওয়া শুরু করে “ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট” (আমি ঢাকার পোলা বলেই কিনা জানিনা গানটা শুনতে খারাপ লাগে নাই তেমন। :P) আমাদের ব্যস্ত অনন্তর সাক্ষাত পাওয়া দায় তার পরও নায়িকা বর্ষা অনন্তর “ভাইয়ার” দেখা পায়। অতঃপর কিভাবে অনন্ত ভাইয়া বর্ষার প্রেমিক হয়ে গেল আমি ঠিক বুঝলাম না। ছবির বাকি কাহিনী এগিয়েছে খুব সাধারন ভাবেই। অনন্ত শুধু যে বর্ষার বাড়ি, গাড়ি দিয়েছে তাই নয়। বর্ষার বাবা
, মা, বোনদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। বর্ষার ইচ্ছা মিডিয়াতে ক্যারিয়ার গড়বে। অনন্ত বর্ষাকে নিয়ে শুরু করে মিডিয়ার ক্যারিয়ার নতুন অধ্যায়। এই সময় এই ছবির এক দুষ্ট চরিত্র কাবিলা বর্ষার কাছে আসে কিছু মিডিয়ার কাজের প্রপজাল নিয়ে (যদিও মূল উদ্দ্যেশ্য বর্ষাকে ব্যাকমেল করা)। বর্ষা যখন একের পর এক লাল পানি খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে তখনই অনন্তের আগমন নায়িকাকে উদ্ধার করতে। এভাবেই এগিয়ে চলে ছবির কাহিনী। বর্ষা লুকিয়ে প্রেম করে অন্য ছেলের সঙ্গে সেটা যখন অনন্তের কাছে ধড়া পরে তখন বর্ষা অনন্তের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে। সেই ছেলে যখন বর্ষাকে ছেড়ে দেয় তখন বর্ষা আবার অনন্তের কাছে ক্ষমা চেয়ে ফেরত যায়। গো বেচাড়া অনন্ত ভালবাসার ফাঁদ থেকে বের হতে পাড়েনা তাই বর্ষা কে আবার
কাছে টেনে নেয়। কিন্তু চূড়ান্ত ফাঁটল ধরে যখন দুঃষ্ট কাবিলা আবাও চাকচিক্যপূর্ণ মিডিয়ার প্রপজাল নিয়ে
আসে। এখানে কাবিলার সঙ্গে ফাইনাল বসের (মিশা) আগমন। বলতেই হয়। মিশা ভিলেন হিসাবে আসলেও দূর্দান্ত। অনন্তর নিষেধ সত্ত্যেও মিশার সঙ্গে বর্ষার কাজ করতে চাওয়া তে
অবশেষে বর্ষা ও অনন্তের সম্পর্কের ইতি ঘটে। অনন্ত তার সমস্ত সম্পত্তি বর্ষার নামে লিখে দিয়ে আত্মহত্যা করতে যায়। এদিকে মিশা খবর পায় বর্ষার নামে সব সম্পত্তি লিখে দেওয়া হয়েছে তাই মিশা বর্ষা কি আটকে অনন্তকে আসতে বলে বর্ষা কে উদ্ধার করতে। অনন্ত আত্মহত্যার পূর্ব মুহুর্তে এই খবর শুনতে পেয়ে উদ্ধার করতে আসে বর্ষাকে। বর্ষাকে উদ্ধারের মদ্ধ্যে শেষ হয় ছবির কাহিনী।
এই ছবির কাহিনী খুবই সাধারন কিন্তু খুবই বাস্তব। আমাদের সমাজের চার পাশে এই ধরনের সম্পর্কের টানা পোড়া আমরা পায়ই দেখি। তবে ছবির কাহিনির উপস্থাপনা ততটা ভাল ছিল বলে মনে হয় নি। এই ছবির একটা ভাল দিক আমার কাছে মনে হয়েছে ছবির গান গুলো। ছবির প্রতিটা গানেই আছে ভিন্নতা। আমার মনে হয় এই ক্ষেত্রে অনন্তকে তারিফ করতেই হয় । তবে আমার দৃষ্টিতে এই ছবির সব চেয়ে ভাল দিক ছিল ছবির একশান দৃশ্য গুলা। বাংলা ছবির তুলনায় একশান দৃশ্য গুলা একটু বেশি উচু মানের হয়ে গেছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে। অনেক নামকরা হিন্দি ছবির তুলনায় ভাল করেছে অনন্ত। এই ছবি তে আমি যেটা পাইনাই তা হল সারপ্রাইজ। ভাল এবং বড় মাপের কোন সারপ্রাইজ থাকলে ছবিটা দেখে আরো একটু মজা পেতাম। তার পরো বলতেই হয় অনন্ত এই ছবি টা বেশ ভাল করেছে। বলতেই ভুলে গেছিলাম সব চেয়ে উন্নতি হয়েছে অনন্তের কথা বার্তা (বাংলা এবং ইংরেজী)। বলতেই হয় লোকটা চেষ্টা করতেছে। চালায়া যান অনন্ত ভাই।